অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, এনবিআর পৃথকের বিষয়টি বাস্তবায়নের পর্যায়ে রয়েছে। আমরা দেখব কর্মকর্তাদের কতটুকু দাবি মেনে নেওয়া যায়। তাদের বিষয়গুলো যতটুকু সম্ভব অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করব। মঙ্গলবার সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টার দপ্তরে এ নিয়ে এক বৈঠকের পর তিনি সংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
এদিকে অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি বলে জানিয়েছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। তাই তারা আজ বুধবার আগারগাঁও রাজস্ব ভবনের সামনে ঢাকার সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অবস্থান কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ে বৈঠকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সংস্কারবিষয়ক পরামর্শক কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বিসিএস (কর) ক্যাডার এবং বিসিএস (শুল্ক ও আবগারি) ক্যাডার কর্মকর্তাদের প্রতিনিধিদের ‘রাজস্বনীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বিষয়ে আলোচনা হয়।
Advertisement
বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ছাড়াও পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, অর্থ সচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে অধ্যাদেশ নিয়ে কর্মকর্তাদের বিভিন্ন উদ্বেগ, পরামর্শ এবং মতামত গুরুত্ব সহকারে শোনা হয়। আলোচনায় উঠে আসে এনবিআর ভাগ করে যে দুটি বিভাগ করা হয়েছে সেগুলোর কাজ শুরু হবে কবে? উত্তরে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আগে গেজেট করতে হবে। গেজেটের আগেও অনেক কাজ আছে। আলোচনায় এনবিআর কর্মকর্তারা সন্তুষ্ট কিনা জানতে চাইলে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা বলেছি আন্দোলন থেকে সরে আসেন। তারা কি বলেছে, সেটায় আমার যায় আসে না।’
এদিকে, এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার পরিষদের ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত অর্থ উপদেষ্টা এবং দুজন উপদেষ্টার বৈঠকটি ফলপ্রসূ হয়নি।
তাই পরবর্তী কর্মসূচি আজ (বুধবার) ১২টায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড প্রাঙ্গণে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে ঘোষণা করা হবে। প্রেস ব্রিফিং শেষ না হওয়া পর্যন্ত ঢাকায় এনবিআরের আওতাধীন আয়কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আগারগাঁও রাজস্ব ভবনের নিচতলায় এবং ঢাকার বাইরের অন্য সব দপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিজ নিজ দপ্তরে অবস্থান কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, আমরা আশা করেছিলাম অর্থ উপদেষ্টা আয়কর ও কাস্টমস ক্যাডারের যৌক্তিক দাবিগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনবেন। কিন্তু আধা ঘণ্টার বৈঠকে তিনি আমাদের কোনো যুক্তি শোনেননি। একতরফাভাবে তার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছেন, যা আমাদের আশাহত করেছে। এ অবস্থায় পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা বৈঠক করে সিদ্ধান্ত জানাবেন।
উল্লেখ্য, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে রাজস্বনীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা নামে দুই ভাগ করে ১২ মে অধ্যাদেশ জারি করে অন্তর্বর্তী সরকার। এতে বলা হয়েছে, পরবর্তী সময়ে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সরকার এটি কার্যকর করার তারিখ ঘোষণা করবে।
Leave a Reply